অনলাইন টাকা আয় করা সম্ভব এই ২০২৩ সালে?

0

 

ভূমিকা 


বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে "অনলাইন টাকা ইনকাম করা/Digital Earning" এই কথা হয়তো অনেক শুনে থাকবেন। কিন্তু আপনি কি জানেন যে, এই অনলাইন থেকে আসলেই কিভাবে টাকা আয় করা যায়? আসুন এই বিষয়ে আমরা বিস্তারিত জেনে নিই। 



১. ব্লগিং এর মাধ্যমে অনলাইন টাকা ইনকাম।    ২. সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক মাধ্যমে অনলাইন টাকা ইনকাম করা।    ৩. ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে অনলাইন টাকা ইনকাম করা।    ৪. অনলাইন সার্ভে করেও আপনি টাকা ইনকাম করতে পারেন।
অনলাইনের অর্থ উপার্জন করার কিছু টিপস।
ছবি - টেক বাজি 


অনলাইন টাকা ইনকাম করার মূল কয়েকটি মাধ্যম


এখানে অনলাইনে টাকা ইনকাম করার সমস্ত পন্থা গুলি আমরা চারটি ভাগে বিভক্ত করেছি, যাতে আপনাদের পড়তে ও বুঝতে সুবিধা হয়। নিচে মূল পন্থা গুলি দেওয়া হলো এবং তার নিচে "কিভাবে অনাইনে অর্থ উপার্জন করা হয়" তা বিস্তারিত বর্ণনা করা হল।


১. ব্লগিং এর মাধ্যমে অনলাইন টাকা ইনকাম।


২. সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক মাধ্যমে অনলাইন টাকা ইনকাম করা।


৩. ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে অনলাইন টাকা ইনকাম করা।


৪. অনলাইন সার্ভে করেও আপনি টাকা ইনকাম করতে পারেন।




১. ব্লগ এর মাধ্যমে অনলাইন টাকা উপার্জন:


সর্বপ্রথম যেটা আলোচনা করব সেটা হলো ব্লগ। একটি ব্লগ বানিয়ে মানুষেরা কিভাবে লাখপতি হতে পারে সেটা। ব্লগ তৈরি করে মানুষেরা অনেক ভাবে টাকা আয় করতে পারেন। একটি সাধারণ পদক্ষেপই হল বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে টাকা উপার্জন করা। কিছু উপায় নিম্নে দেওয়া হল:



বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্কে সদস্যতা: বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক হল একটি প্রতিষ্ঠান যা বিজ্ঞাপনদাতারা এবং প্রকাশকদের মাঝে মাঝে সংযোগ করে। ব্লগের মাধ্যমে আপনি বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্কের সদস্য হয়ে বিজ্ঞাপন প্রকাশ করতে পারেন এবং এর মাধ্যমে আপনি টাকা উপার্জন করতে পারেন। এটি সাধারণত প্রতিবার বিজ্ঞাপন বা বিজ্ঞাপনের ক্লিকে ভিত্তি করে হয়। 



স্পন্সরশিপ: আপনি বিভিন্ন কোম্পানির সাথে স্পন্সরশিপ চুক্তি স্বাক্ষর করে এবং তাদের পণ্য বা পরিষেবা পরিচালনা করতে পারেন। একটি স্পন্সরশিপের জন্য আপনার ব্লগে বিশেষ পণ্য বা পরিষেবা নিয়ে লিখতে পারেন, বিশেষ বিষয়ে স্পন্সরকৃত পোস্ট বা বিজ্ঞাপন প্রকাশ করতে পারেন। স্পন্সরশিপ দ্বারা আপনি নির্দিষ্ট টাকা বা সম্মানও পেতে পারেন।



এফিলিয়েট মার্কেটিং: এটি একটি বিকল্প উপায় যেখানে আপনি আপনার ব্লগে পণ্য বা পরিষেবা সম্পর্কিত একটি লিঙ্ক প্রদান করে এবং যখন কেউ আপনার লিঙ্ক ব্যবহার করে ওই পণ্য বা পরিষেবা ক্রয় করে, আপনি কমিশন পাবেন। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় যে ধরুন আপনি লক্ষ্য করেছেন যে আমাজনের একটি পণ্য বাজারে দারুন প্রভাব ফেলেছে এবং মানুষ জন ওই পণ্য বস্তুটির ওপর বেশ আকৃষ্ট, আপনি আমাজনের এফিলিয়েট মার্কেটিং একাউন্ট খুলে ওই প্রোডাক্টটি আপনার ব্লগে রাখতে পারেন এবং কোনো প্রাসঙ্গিক ব্যক্তিকে ওই ব্লগ পোস্ট টি শেয়ার করতে পারেনি। ওই ব্যক্তি যদি প্রোডাক্টটি কেনেন তাহলে আপনি আমাজনে কাছ থেকে কমিশন পাবেন। 




ডিজিটাল প্রোডাক্ট বিক্রয়: আপনি আপনার ব্লগে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি করা ডিজিটাল প্রোডাক্ট বিক্রয় করতে পারেন, যেমন ইবুক, অনলাইন কোর্স, টেমপ্লেট, ইত্যাদি। আপনি আপনার ব্যক্তিগত দক্ষতা বা জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে ডিজিটাল প্রোডাক্ট তৈরি করতে পারেন এবং এগুলি বিক্রয় করে টাকা উপার্জন করতে পারেন।




মেম্বারশিপ সাইট: আপনি আপনার ব্লগে একটি মেম্বারশিপ সাইট তৈরি করতে পারেন, যেখানে আপনি আপনার পাঠকদেরকে একটি মাসিক বা বার্ষিক ফি চার্জ করতে পারেন এবং সাপ্তাহিক, মাসিক বা বার্ষিক সদস্যদের জন্য প্রামাণ্যপূর্ণ বিশেষ কনটেন্ট প্রদান করতে পারেন।



ব্লগ মনিটাইজেশন প্লাটফর্ম: এখানে বিভিন্ন ব্লগ মনিটাইজেশন প্লাটফর্ম আছে, যেখানে আপনি আপনার ব্লগের জন্য বিজ্ঞাপন দেখাবেন এবং প্রতিটি বিজ্ঞাপনের জন্য পেমেন্ট পাবেন। উদাহরণস্বরূপ, Google AdSense, Media dot net, AdThrive, Ezoic এবং বিভিন্ন অন্যান্য মনিটাইজেশন প্লাটফর্ম আছে যা ব্লগারদেরকে টাকা উপার্জন করতে সহায়তা করে।


এই পদক্ষেপগুলির মাধ্যমে ব্লগাররা ব্লগ থেকে আয় করতে পারেন এবং ব্লগ একটি নির্ভরযোগ্য মাধ্যম যেখান থকে আপনি একটি বড়ো মাপের মোটা অঙ্কের টাকা আয় করতে পারেন। 




২. সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অনলাইন টাকা উপার্জন করা:



এখন বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে বা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অনলাইন টাকা উপার্জন করা বেশ সহজ হয়ে গেছে। আপনার সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলের রিচ এর ওপর এই উপার্জন নির্ভর করে। নিচে বিস্তারিত পন্থা গুলি উল্লেখ করা হলো।


সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার: আপনি প্রোডাক্ট রিভিউ ভিডিও বানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে শেয়ার করে টাকা উপার্জন করতে পারেন।


স্পন্সরশিপ: আপনার প্রোফাইল এর রিচ যদি ভালো থাকে তাহলে আপনি কোনো কোম্পানির স্পন্সর করা প্রোডাক্ট এর প্রমোশন করে উপার্জন করতে পারেন।



গ্রুপ: আপনি যদি কোনো সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে গ্রুপ এডমিন হয়ে থাকেন এবং সেই গ্রুপে যদি হাজার হাজার মেম্বার থাকে তাহলেও আপনি গ্রুপ প্রমোশনাল পোস্ট করে ইনকাম করতে পারেন।



• পেজ বা গ্রুপ সেলিং: আপনার কাছে হাই রিচ পেজ বা গ্রুপ থাকলে আপনি ওই গ্রুপ বা পেজ বিক্রি করে উপার্জন করতে সক্ষম হতে পারেন।



সামগ্রিকভাবে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম একটা ভালো উপার্জনের উপায় হতে পারে, তবে আপনি কীভাবে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করতে পারবেন সেটা আপনার উপর নির্ভর করছে।



৩. ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে টাকা আয় করা:


ব্রান্ডেড কনটেন্ট এবং স্পন্সরশিপ: আপনি বিভিন্ন কোম্পানির ব্র্যান্ডের জন্য "ব্রান্ডেড কনটেন্ট বা স্পন্সরশিপ" লিখতে পারেন। বিশেষ বিষয়ে ব্র্যান্ডের সাথে সম্পর্কিত কনটেন্ট এবং স্পন্সরশিপ হল বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পণ্য, পরিষেবা বা ব্র্যান্ড মার্কেটিং সংক্রান্ত কনটেন্ট বা পোস্ট একটি ব্লগে প্রকাশ করা। 



কনটেন্ট রাইটিং: আপনার যদি লেখা লেখি করতে ভালো লাগে এবং আপনি কোনো একটি নির্দিষ্ট বিষয় বিশেষ জ্ঞান অর্জন করে থাকেন তাহলে সেই বিষয় কনটেন্ট লিখতে পারেন এবং তার থেকে মোটা টাকা উপার্জন করতে পারেন।



বিজ্ঞাপন বানানো: অনেকে কোম্পানি আছে যারা ফ্রিল্যান্সিং সাইট এর মাধ্যেমে বিজ্ঞাপনের জন্য ভালো ক্রিয়েটর খোঁজেন। আপনার মধ্যে যদি উচ্চ লেভেলের ক্রিয়েটিভিটি থেকে থাকে তাহলে আপনি বিজ্ঞাপনের ভিডিও বা অ্যাড ফিল্ম বানিয়ে ইনকাম করতে সক্ষম হবেন। 

অথবা, অনেকে মানুষ আছে যারা নিজেদের ইউটিউব চ্যানেলের জন্য ভিডিও ক্রিয়েটর খোঁজেন, আপনি তাদের স্পন্সর করা ভিডিও বানিয়ে টাকা উপার্জন করতে পারেন।



ফ্রিল্যান্সিং সাইট এর মাধ্যমে আপনি যেমন চান ঠিক তেমন কাজ করতে পারেন, সুতরাং আপনি কি করছেন এবং আপনার কাজের কোয়ালিটি বা কোম্পানির ডিমান্ড অনুযায়ী আপনার ইনকাম নির্ধারিত হয়। যতো বেশি করতে পারবেন তত বেশি ইনকাম।



৪. অনলাইন সার্ভে করে আর্থিক উন্নতি:


"অনলাইন সর্ভে" এটিও ফ্রিল্যান্সিং এর মধ্যেই আসে তাও এটাকে ওই লিস্টে রাখতে পারলাম না। এই সার্ভে আপনার ব্যাক্তিগত মতমত জানতে চাওয়া হয় তার সাথে কিছু অতিরিক্ত তথ্য যেমন, আপনার স্যালারি, শিক্ষা, পরিবারের সদস্য ইত্যাদি। আপনি যদি চান তাহলে আপনার মতামত ওর তথ্য প্রদান কয়েও অর্থ উপার্জন করতে পারেন। তবে বলে রাখা ভালো যে এই কাজে উপার্জনের অঙ্কটা অনেক কম এবং তার সাথে কিছু সমস্যাও দেখা যায়। সমস্যা গুলি হলো (i) সঠিক সার্ভে সাইট খুজে বের করা (ii) কতটা নিরাপদ সাইট (iii) সার্ভে করার পর উপার্জনের হার (iv) কোম্পানির প্রয়োজনীয়তা আপনার প্রোফাইলের সঙ্গে মিলছে কি না। 




সংক্ষেপে:


ব্লগিং, সোশ্যাল মিডিয়া, ফ্রিল্যান্সিং এবং অনলাইন সার্ভে মাধ্যমে অনলাইনে টাকা ইনকাম করার সম্ভাবনার বিষয়ে এই বিষয়গুলির উপর ভিত্তি করে একটি সংক্ষেপে সমাপ্তি এবং একটি বর্ণনা। আশা করছি আপনাকে সঠিক তথ্য দিতে পেরেছি। যদি এই সংক্রান্ত কোনো প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্ট বক্সে পোস্ট করে দিন আমরা যথাযথ ভাবে আপনার প্রশ্নের উত্তর দেব।




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)